পশ্চিমবঙ্গ সরকার মহিলাদের কল্যাণ সাধনে যে সমস্ত প্রকল্প চালু করেছে তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ও জনপ্রিয় প্রকল্প হল লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্প। ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে এই প্রকল্পটি চালু হবার পর থেকে প্রায় ১ কোটি ৮০ লাখ ৪ হাজার ৬৪৯ জন মহিলা সরাসরি এই প্রকল্পের সুবিধা ভোগ করেন, যার পরিসংখ্যান দিনে দিনে বেড়ে চলেছে।
বিগত কয়েক মাস যাবত লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা সুবিধা ভোগীদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ঢুকতে দেরি হচ্ছে। সরকারের তরফ থেকে ১২টি নির্দেশিকা জারি করেছে, যে সমস্ত উপভোক্তারা এই নির্দেশিকার মধ্যে পরবে তারা আর এই প্রকল্পের টাকা পাবে না। নিচে এই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হল।
লক্ষীর ভান্ডার প্রকল্পের টাকা পাওয়া কাদের বন্ধ হবে?
লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পের মাধ্যমে মহিলাদেরকে অর্থনৈতিক ভাবে সাহায্য প্রদান করার জন্য মার্সিক ৫০০ টাকা বা ১০০০ টাকা করে দিয়ে আসে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। রাজ্য সরকার লক্ষ্য করে দেখেছেন যে অনেক মহিলার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে এক মাসে একাধিক বার এই লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকা ঢুকেছে।
দুয়ারের সরকার প্রকল্প চালুর সময় যখন আবেদনকারীরা ফ্রম জমা দিচ্ছিল তখন খুঁটিয়ে দেখা সম্ভব হয়নি, কেউ একাধিকবার ফ্রম জমা দিয়েছে কিনা। লক্ষ্মীর ভান্ডারের সহায়তা প্রাপ্তদের তালিকায় এক মহিলার নাম একাধিক বার উল্লেখ আছে।
লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পের জন্য যোগ্য নয় এমন অনেক প্রার্থীও মাসের পর মাস ধরে এই প্রকল্পের টাকা পেয়ে যাচ্ছে। আবার যাদের মার্সিক ৫০০ টাকা করে পাবার কথা তাদের মধ্যে অনেকে আবার মাসে ১০০০ টাকা করে পাচ্ছে। এই সমস্ত কারণে এই প্রকল্পে সচ্ছতা আনতে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে জুলাই মাসে ১২ টি নতুন নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে।
🔥আরও পড়ুনঃ-
👉 ই শ্রম কার্ড থাকলে খুশির খবর! আপনিও পেতে পারেন ৩০০০ – ৫০০০ টাকা।
লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের উপভোক্তাদের জন্য জুলাই মাসে সরকারের ১২ টি নির্দেশিকা
1. যে সমস্ত উপভোক্তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে একাধিক উপভোক্তার টাকা ঢুকছে তাদেরকে টাকা দেওয়া বন্ধ করে দেবে সরকার।
২. লক্ষীর ভান্ডারে টাকা পাওয়ার জন্য উপভোক্তাদের বয়স ২৫ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে হতে হবে। যে সমস্ত উপভোক্তারা উল্লেখিত বয়সের মধ্যে পড়ে না অথচ এই প্রকল্পের সুবিধা ভোগ করছেন, তাদের ডকুমেন্টস যাচাই করে টাকা দেওয়া বন্ধ করা হবে।
৩. অনেক উপভোক্তা রয়েছেন যারা জেনারেল এবং ওবিসি কাস্ট হওয়ার সত্ত্বেও এস সি, এস টি উপভোক্তাদের মত মাসে ১০০০ টাকা করে পাচ্ছে, তাদের টাকা দেওয়া বন্ধ করা হবে।
৪. যে সমস্ত উপভোক্তার আধার কার্ডতে এক নাম এবং ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে আরেক নাম রয়েছে, তাদের অ্যাকাউন্টে আর টাকা পাঠানো হবে না।
৫.যে সমস্ত ভোক্তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে বেশি টাকা ঢুকছে তাদের টাকা দেওয়া বন্ধ করা হবে।
৬. যারা নিজের কাস্ট সার্টিফিকেট না দিয়ে অন্যের কাস্ট সার্টিফিকেট দিয়েছেন এবং মাসে ১০০০ টাকা করে পাচ্ছেন তাদের অ্যাকাউন্টে টাকা দেওয়া বন্ধ করা হবে।
৭. যে সমস্ত আবেদনকারীর নিজের নামে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নেই, তাদেরকে টাকা দেওয়া বন্ধ করা হবে।
৮. পরিবারের কেউ যদি সরকারি চাকরি করে তাহলে সেই পরিবারের কোনো মহিলা আর এই প্রকল্পের টাকা পাবে না।
৯. ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে KYC আপডেট করা না থাকলে, তাদের অ্যাকাউন্টে আর এ প্রকল্পে টাকা ঢোকানো হবে না।
১০. যে সমস্ত মহিলারা বিধবা ভাতার মত আরোও অন্য প্রকল্পের লাভ নিচ্ছে তাদের কে এ প্রকল্পে টাকা আর দেওয়া হবে না এবং পাঠানো টাকা ফেরত নেওয়া হবে।
১১. যে সমস্ত উপভোক্তারা আধার কার্ড এবং কাস্ট সার্টিফিকেট জাল করে এই প্রকল্পের সুবিধা নিচ্ছেন, তাদেরকে এই প্রকল্প থেকে বাদ দেওয়া হবে।
১২. উপভোক্তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সঙ্গে আধার লিঙ্ক না থাকলে, তাহলে উপভোক্তা আর এ প্রকল্পের সুবিধা পাবে না।