ভারতের নাগরিকদের জমানো অর্থের বেশীর ভাগটা তাদের স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় হয়ে যায়। পশ্চিমবঙ্গ সরকার রাজ্যের নাগরিকদের চিকিৎসার খরচ বহন করার জন্য স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্প চালু করে। প্রকল্পটি চালু হবার পর থেকে পশ্চিমবঙ্গের অসংখ্য মানুষ এই প্রকল্পের সুবিধা ভোগ করছে।
দিনে দিনে স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পের দুর্নীতি বেড়ে চলেছে, বিশেষ করে বেসরকারি নার্সিংহোম এবং হাসপাতাল গুলি ভুয়ো বিল তৈরি করে দেদার টাকা লুটছে। যাদের প্রকৃত পক্ষে সাহায্যের প্রয়োজন তারাই সাহায্য পাচ্ছেনা, একটা দুর্নীতি চক্র কাজ করছে, এমন ভুঁড়ি ভুঁড়ি অভিযোগ স্বাস্থ্য দফতরের কাছে জামা পড়েছে।
স্বাস্থ্য সাথী কার্ড নিয়ে করা স্বাস্থ্য দপ্তরের বিভিন্ন পদক্ষেপ
এবার স্বাস্থ্য দপ্তর বড় পদক্ষেপ নিতে চলেছে। যাতে স্বাস্থ্যসাথী কার্ডকে ব্যবহার করে কোন রকম দুর্নীতি না করা যায় তার জন্য স্বাস্থ্য দপ্তর বিশেষ ব্যবস্থা নিতে চলেছে।
স্বাস্থ্য দপ্তর স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের সফটওয়্যারকে পরিবর্তন করতে যাচ্ছে যেখানে অটোমেটিক ভাবেই স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের বেনিয়ম ধারা পরে যাবে। কোন বেসরকারি হাসপাতাল বা নার্সিংহোম একটি স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নিয়ে এক বছরে দশবার বেনিয়ম তা ধরা পড়ে যাবে। আর ধরা পরলে সেই কার্ডটি ব্লক হয়ে যাবে।
যদি কোন চিকিৎসক সরাসরি স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের দুর্নীতিতে জড়িয়ে পরে তাহলে সেই চিকিৎসক আর কোনদিন স্বাস্থ্য সাথী কার্ড এর রোগীকে চিকিৎসা করতে পারবে না।
স্বাস্থ্য দফতরে কাছে অভিযোগ এসেছে কিছু কিছু বেসরকারি নার্সিংহোম এবং হাসপাতাল ডাক্তারের সহযোগিতায় ভুয়ো বিল তৈরি করে সরকারি টাকা লুটছে, আর সত্যিই যাদের চিকিৎসার প্রয়োজন তাদেরকে ফিরিয়ে দিচ্ছে।
🔥আরও পড়ুনঃ-
👉 ব্যাঙ্কে জিরো ব্যালেন্স অ্যাকাউন্ট থাকলে সাবধান! বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
স্বাস্থ্য দপ্তর এই দুর্নীতিকে রুখতে সফটওয়্যার তৈরি সঙ্গে সঙ্গে ২০০ জন চিকিৎসককে আলাদাভাবে প্রশিক্ষণ দেবার ব্যবস্থা করেছে, যাতে তারা সহজে এই দুর্নীতিকে ধরতে পারে।
স্বাস্থ্য দপ্তরের পক্ষ থেকে এই সমস্ত ডাক্তারদেরকে ১৮ই আগস্ট ভার্চুয়াল প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে। অন্যদিকে স্বাস্থ্য দপ্তর জেলাভিত্তিক নজরদারিও বাড়াতে চলেছে।
কোন বেসরকারি হসপিটাল বা নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে অনিয়ম ধরা পড়লে, দপ্তর তাদের বিরুদ্ধে কড়া থেকে কড়া পদক্ষেপ নেবে। আর দোষী সাব্যস্ত হলে তাদের লাইসেন্স বাতিলের সঙ্গে সঙ্গে জেল পর্যন্ত হতে পারে।
স্বাস্থ্য সাথী কার্ড নিয়ে করা অপরাধের চিহ্নিত করণ
স্বাস্থ্য সাথী কার্ডকে নিয়ে করা অপরাধকে স্বাস্থ দপ্তর তিনটি রঙে চিহ্নিত করবে।
প্রথমটি হল লাল রং – যেটি গুরুতর অপরাধের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হবে যেখানে বেসরকারি নার্সিংহোম অথবা হাসপাতাল রোগীর একই খরচ একাধিকবার দেখালে জরিমানা সহ জেল হতে পারে।
দ্বিতীয়টি হল হলুদ রং – যেটি মাঝারি ধরনের অপরাধের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হবে যেখানে বেসরকারি নার্সিংহোম অথবা হাসপাতাল রোগীর চিকিৎসার দিন বা তারিখ পরিবর্তন করে অনিয়ম করলে মাঝারি শাস্তির মুখে পড়তে হবে।
তৃতীয়টি হল সবুজ রং – যেটি খুব কম অনিয়মের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হবে যেখানে বেসরকারি হাসপাতাল অথবা নার্সিংহোমকে সতর্ক করে দেওয়া হবে।